ওয়েবসাইট কি?

ওয়েবসাইট হলো কতগুলো পাতা যেখানে আপনি আপনার ব্যবসা বা ব্লগ বা অন্যান্য যে কোন বিষয় নিয়ে লিখতে বা উপস্থাপন করতে পারেন।
এখানে পাতা বলতে বুঝানো হয়েছে যে, যেখানে আপনি আপনার ব্যবসা বা ব্লগ বা অন্যান্য যে কোন বিষয় লিখবেন বা কোন ছবি দিয়েও উপস্থাপন করবনে। মানে এই ইন্টারনেটেরে মাধ্যমে আপনি যে বিষয়ে জানেন বা জানাতে চান তার একটি মাধ্যম হলো ওয়েবসাইট। এই ওয়েবসাইটকে আবার কেউ সাইটও বলে থাকে।

ওয়েবসাইট তৈরী করতে কি কি লাগে?

ওয়েবসাইট তৈরী করতে হলে প্রথমে আপনার ২ টি জিনিস অবশ্যই লাগবে। একটি হলো ডোমেইন এবং অপরটি ওয়েব সার্ভার।

ডোমেইন আবার কি?

আমাকে যদি আপনি জিজ্ঞাস করেনে যে আপনি কোথায় থাাকনে বা আপনার ঠিকানা কোথায়। তাহলে আমি বলব আমি ঢাকার ধানমন্ডি ১৫ নং এ থাকি। এই যে আমি আপনাকে ঠিকানাটা বললাম আমাকে খোজার জন্য এই ঠিকানাটাই হলো ডোমেইন। এই ডোমেইনের মাধ্যমেই আমার বা আপনার ওয়েবসাইট খুজে পাবে সকলেই।
উদাহারন হিসেবে যদি কিছু ডোমেইনের নাম বলি – www.facebook.com, www.youtube.com বা www.amarcourse.com। এই গুলো এক একটি হলো ডোমেইন।

বুঝলাম তাহলে ওয়েব সার্ভার কি?

আচ্ছা আমি শুধুমাত্র আপনাকে আমার ঠিকানা বললাম কিন্তু আমি তো কোন এক বাসায় থাকি তাই না? যেখানে আমার থাকার জন্য টেবিল, চেয়ার, কম্পিউটার, খাট ইত্যাদি আছে। এই বাসাটাই হলো ওয়েব সার্ভার।
মানে আপনি যে ওয়েবসাইট তৈরী করবেন বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সে গুলো তো কোন এক জায়গায় রাখতে হবে, তাই না? এই জায়গাটাই হলো ওয়েব সার্ভার বা একটি কম্পিউটার যার মাধ্যমে ওয়েব সার্ভার তৈরী করা হয়। বাসায় যেমন ২ রুমের বা ৪ রুমের হয় ঠিক তেমনি ওয়েব সার্ভাররে জন্যও আপনাকে জায়গা কিনতে হবে। যেমন- ১ জিবি বা ৩ জিবি বা আপনার প্রয়োজন মত।

ওয়েবসাইট কত প্রকার

ওয়েবসাইট মূলত ২ ধরনের হয়ে থাকে। একটি হলো স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট এবং অপরটি হলো ডাইনামিক ওয়েবসাই

স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট কি?

স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট হলো এমন এক ধরনরে ওয়েবসাইট যেখানে আপনার তথ্য গুলো ফিক্সড থাকে। মানে আপনি যে তথ্য গুলো দিয়েছেন তা অটোমেটিকালি পরিবর্তন হবে না। আপনি যে ভাবে তৈরী করেছিলেন সেভাবেই থাকবে। এই সব স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটগুলো HTML দিয়ে তৈরী করা হয়। এর জন্য আপনার কোন ডাটাবেজের প্রয়োজন হয় ন।
যেহেতু আপনার ওয়েবসাইটের তথ্যগুলো ফিক্সড সেহেতু যদি কখনো তথ্য পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয় তাহলে সেই তথ্য সম্বলিত পাতাটি ওয়েব সার্ভার থেকে ডাউনলোড করে তারপর পরিবর্তন করে আবার ওয়েব সার্ভারে এ রেখে দিতে হবে। মানে সব কিছুন ম্যানুয়াল।

ডাইনামিক ওয়েবসাইট কি?

স্ট্যাটিক ওয়েবসাইটের উল্টোটাই হলো ডাইনামিক ওয়েবসাইট। যেখানে আপনার তথ্য গুলো অটোমেটিকালি পরিবর্তন হবে আপনার লেখা প্রোগ্রামিং কোডের মাধ্যমে। যেমন আপনি যে আজকে আমার ওয়েব সাইট ভিজিট করেন তাহলে দেখতে পারবেন আজকের তারিখ কিন্তু আবার যদি ২ দিন পর আমার ওয়েবসাইট ভিজিট করনে তাহলে দেখতে পারবেন ২ দিন পরের তারিখ। এখানে আমি শুধু কোডের মাধ্যমে একটি সিস্টেম তৈরী করে রেখেছি যার ফলে আপনি একেক দিন এসে একেক তারিখ দেখতে পাচ্ছেন। মানে তথ্য অটোমেটিকালি পরবির্তন হচ্ছে। এটাই হলো ডাইনামিক ওয়েবসাইটের কাজ।
উদাহারন দিয়ে যদি বলা যায় যে, আপনি এই আমার কোর্স সাইটটি ভিজিট করেছেন আজকে। আজকে দেখতে পারবেন এক রকম তথ্য আবার যদি কয়েকদিন পরে আবার ভিজিট করেন তাহলে দেখতে পারবেন আরেক নতুন তথ্য। আমি কিন্তু এই নতুন তথ্যের জন্য ঐ পাতাটি ওয়েব সার্ভার থেকে ডাউনলোড করব না কারন আমি কোডের মাধ্যমে এমন এক সিস্টেম করে রেখেছি যেখানে আমি নতুন কোন টিউটোরিয়াল একটি ইডিটোরের মাধ্যমে লিখে দিলেই তা আমার কোর্স ওয়েব সাইটের প্রথম পাতায় দেখা যাব।
আর এই ধরনের ডাইনামিক ওয়েবসাইট তৈরী করা হয় PHP, ASP.net ইত্যাদি দিয়ে।

ওয়েবসাইট কিভাবে কাজ করে

এতোক্ষন তো বুঝলাম যে ওয়েবসাইট কি ও কত প্রকার এবং ডোমেইন আর ওয়েব সার্ভারই বা কি, তাই না? এখন চলুন জেনে আসা যাক যে এই ওয়েবসাইটি কিভাবে কাজ করে, মানে আমাদেরকে কিভাবে তথ্যগুলো দেখায় বা সম্পূর্ন সিস্টেমটা কিভাবে কাজ করে।
আমারা জানি যে কোন ওয়েবসাইট দেখতে হলো প্রথমেই আমাদেরকে একটি ব্রাউজার ব্যবহার করতে হবে ( ক্রোম, মজিলা, অপেরা, সাফারি বা অন্যান্য কোন ব্রাউজার) যেখানে আমরা ডোমেইন এর নামটি এড্রেসবারে টাইপ করি। এখন এই যে ডোমেইন এর নামটি লিখলেন এবং তারপর কম্পিউটার কিবোর্ডের ইন্টার বাটনটি প্রেস করলনে তখন আমাদের সাথে সাথে সেই ডোমেইনের তথ্য গুলো দেখাচ্ছে বা ওয়েবসাইটটি চলে আসছে, তাই না? কিন্তু আসলে এই সম্পূর্ন প্রসেসটা কিভাবে হচ্ছে?
ওকে, তাহলে আসুন আমরা জেনে নেই।
এখানে সম্পূর্ন ব্যাপারটা ঘটছে ক্লাইন্ট এবং ওয়েব সার্ভারের মধ্যে। ক্লাইন্ট একটি রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছে ওয়েব সার্ভারের কাছে এবং ওয়বে সার্ভার সেই রিকোয়েষ্টটি গ্রহন করে তার পরিপ্রেক্ষিতে একটি ফিরতি রেসপন্স দিচ্ছে ক্লাইন্টকে।
এখানে ক্লাইন্ট বলতে বোঝানো হচ্ছে আপনার ব্রাউজারকে, যেমন ক্রোম বা মজিলা ওয়েব ব্রাউজার, যার মাধ্যমে আপনি সেই ডোমেইনটি টাইপ করে সার্ভারের কাছে একটি রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছেন।
এখানে সার্ভার হলো একটি কম্পিউটার যেখানে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের তথ্য সংরক্ষন করেছিলেন বা করা থাকে। যখন ক্লাইন্ট কোন একটি ওয়েবসাইট বা ওয়েবসাইটের কোন একটি পাতা দেখতে চায় তখন সার্ভার সেই ওয়েবসাইটের একটি কপি ক্লাইন্টের কম্পিউটারে ডাউনলোড করে এবং পরবর্তীতে সেই ওয়েবসাইটেকে ক্লাইন্টে দেখায়।

ক্লাইন্ট এবং ওয়েব সার্ভারের রিকোয়েস্ট

বুঝা গেলো? এখনো বুজেন নাই? ওকে, তাহলে আরো একটু ভালো করে জানা যাক।
১) আপনার ইন্টারনেট কানেকসন – প্রথমেই আপনার একটি ইন্টারনেট কানেকশন থাকা লাগবে যাতে করে আপনি ব্রাউজারে এড্রেসটি টাইপ করে ওয়েব সার্ভারে ডাটা পাঠাতে পারবেন।
২। TCP/IP – এর মানে হলো Transmission Control Protocol বা Internet Protocol যা communication করার জন্য একটি protocols যা আপনাকে নিশ্চিত করবে যে কিভাবে আপনার পাঠানো ডাটা যাবে এবং ফেরত আসবে।
৩। DNS – এটি হলো Domain Name Server যা সমস্ত ওয়েবসাইটের একটি address book। যখন আপনি কোন ওয়েব এড্রেস ব্রাউজারে লিখেন তখন ব্রাউজার এই এড্রেসটি একটি IP এ পরিবর্তন করে Domain Name Servers এ খুজে নেয়। ব্রাউজার এখন খুজে নিবে যে কোন সার্ভারে এই এই ওয়েব এড্রেসটি আছে যাতে করে একটি HTTP messages পাঠাতে পারে।
৪) HTTP: এর মানে হলো Hypertext Transfer Protocol। এটি একটি প্রটোকল যা ক্লাইন্ট এবং সার্ভারের মধ্যে ডাটা আদান-প্রদান করার একটি মাধ্যম।

তাহলে সর্বশেষ কি বুঝা গেল?

যখন আপনি কোন একটি ওয়েব এড্রসে টাইপ করেন ব্রাউজারে তখন-
১) ব্রাউজার DNS server এ যায় এবং ঐ ওয়েব এড্রেসেরে রুপান্তরিত Ip Address খুজে বের করে যেখানে ওয়েব সাইটি রাখা হয়েছে।
২) এরপর ব্রাউজার HTTP রিকোয়েস্ট সার্ভারের কাছে পাঠায় যে ঐ ওয়েবসাইটের একটি কপি পাঠাও আমার কাছে। এই ওয়েবসাইটের কপি ক্লাইন্ট এবং সার্ভারের মধ্যে আদান প্রদান হয়ে থাকে TCP/IP এর মাধ্যমে।
৩। যদি সার্ভার ব্রাউজারের রিকোয়েস্ট গ্রহন করে তাহলে সার্ভার একটি “200 OK” মেসেজ পাঠায় যার মানে হচ্ছে – ব্রাউজার তুমি এখন আমার কাছ ঐ ওয়েবসাইটের তথ্য ডাটা প্যাকেট হিসবে নিতে পারবে।
৪। এখন সর্বশেষ ব্রাউজার এই ডাটা প্যাকেট গুলোকে সম্পূর্ন একটি ওয়েবসাইটে রুপান্তর করে আপনার কাছে দেখায়।
 

Leave a Comment